সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার নিয়ম - সৃজনশীল প্রশ্ন কত পৃষ্ঠা লিখতে হবে

নিশ্চয়ই আপনি সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার নিয়ম জানতে চাচ্ছেন ? যদি আপনি শিক্ষার্থী হিসেবে না জানেন যে সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার নিয়ম সম্পর্কে তাহলে অবশ্যই আপনি আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন তাহলে আপনি জানতে পারবেন একটি সুন্দর ভাবে সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার নিয়ম। সেই সাথে আরো জানতে পারবেন সৃজনশীল প্রশ্ন কত পৃষ্ঠা লিখতে হবে সে সম্পর্কে।

সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার নিয়ম

পোষ্ট সূচিপত্র ঃ সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার নিয়ম - সৃজনশীল প্রশ্ন কত পৃষ্ঠা লিখতে হবে

সৃজনশীল বলতে কী বোঝায় ?? 

সৃজনশীলতা বলতে বোঝায় নতুনভাবে কোন কিছু তৈরি করা নতুন কিছু চিন্তা করে তার রূপ দান করা। প্রত্যেক মানুষেরই নিজস্ব কোন কাজের উপরে নিজস্ব চিন্তা রয়েছে কিন্তু সে  কাজের উপরে নতুন ভাবে চিন্তা করে সে কাজটাকে নতুন রূপ দেয়াকে বলছে সৃজনশীলতা। এককথায় সৃজনশীলতা হল কোন কিছুকে নতুনভাবে উদ্ভাবন করা। আপনি এটার আর এক অপর নাম দিতে পারেন সৃষ্টিশীলতা। কারণ সৃজনশীল মানেই আপনি নতুন কিছু সৃষ্টি করা। সৃজনশীল হলো নতুনের আবিষ্কার সেটা সকল ক্ষেত্রে হতে পারে।

যেহেতু আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করছি সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার নিয়ম ও সৃজনশীল প্রশ্ন কত বিস্তার লিখতে হবে সে সম্পর্কে সে তো আজকের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি হবে আমাদের শিক্ষা ক্ষেত্রে সৃজনশীলতা।

উপরের বর্ণনা দ্বারা আপনাদেরকে ধারণা দেওয়া হল সৃজনশীল বলতে আপনি কি বুঝেন যদি আপনি সৃজনশীল এর মানেই না বুঝেন তাহলে প্রশ্ন লেখার ক্ষেত্রে সৃজনশীল সম্পূর্ণ বুঝতে পারবেন না এজন্য আপনাকে সে উপরোক্ত বর্ণনাটা দেওয়া হলো ।

সৃজনশীল প্রশ্ন কি ?? কয়টি স্তর থাকে ?? 

সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার আগে অবশ্যই আপনাকে সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। 
আমরা জানি বর্তমানে সৃজনশীল প্রশ্নে আমাদেরকে একটা উদ্দীপক দেওয়া হয়। কোন একটি প্রশ্নের উদ্দীপকের সাথে জ্ঞান অনুধাবন প্রয়োজন দক্ষতা চারটে বিষয়কে যখন একত্রে করে আপনি যখন কোন প্রশ্নের উত্তর লিখবেন সেটাই হচ্ছে সৃজনশীল প্রশ্ন। সৃজনশীল প্রশ্ন সম্পূর্ণ আপনার চিন্তাভাবনা দ্বারা নতুনভাবে লিখতে হবে।
সৃজনশীল প্রশ্নের স্তর বা কাঠামো হচ্ছে ০৪ টি । যথা ঃ
  1. ✅  জ্ঞান মূলক
  2. ✅  অনুধাবনমূলক
  3. ✅  প্রয়োগমূলক
  4. ✅  উচ্চতর দক্ষতা মূলক
আরো পড়ুন ঃ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ও উদাহরণ সহ জেনে নিন ।

আমরা জানি একটি সৃজনশীল প্রশ্নের মধ্যে চারটি প্রশ্ন থাকে ক, খ, গ ,ঘ।
  • ✔ ক হচ্ছে জ্ঞানমূলক
  • ✔ খ  হচ্ছে অনুধাবনমূলক
  • ✔ গ  হচ্ছে প্রয়োগমূলক
  • ✔ ঘ   হচ্ছে।উচ্চতর দক্ষতা মূলক

অনেক সাবজেক্ট আছে যেগুলোতে আবার তিনটি প্রশ্ন থাকে। সবই ক্যাটাগরি সেম কিন্তু বেশিরভাগ সাবজেক্টে চারটি প্রশ্ন থাকে। এজন্য আমি চারটি নিয়ে আলোচনা করলাম।

(ক) জ্ঞানমূলক প্রশ্ন লেখার নিয়ম

জ্ঞান লোক সৃজনশীল প্রশ্ন বলতে ক নম্বর কে বোঝানো হয়। জ্ঞানমূলক সৃজনশীল প্রশ্ন বা  ক এর জন্য এক নম্বর বরাদ্দ থাকে। এই জ্ঞানমূলক প্রশ্নের উত্তর লিখতে হয় বা উত্তর চাই বই থেকে যে কোন সংজ্ঞা কিংবা এক বাক্যে উত্তর দেওয়া যায় এমন উত্তর।

 এ প্রশ্নের জন্য আপনাকে অবশ্যই এক থেকে তিন লাইনের ভিতরে উত্তর লিখতে হবে আর যদি একবাক্যে এক কথার উত্তর হয় তাহলে এক কথা এক বাক্যে উত্তর লিখতে হবে। অনেক ছাত্র-ছাত্রী আছে যারা এক কথার উত্তর কেউ দুই তিন লাইন লিখে দেয় এটা তাদের জন্য বড় ভুল এতে নাম্বার না পাওয়ার ও আশঙ্কা থাকে আবার সময়ও নষ্ট হয় এজন্য আমরা এটা যত কম এ পারবো শেষ করব। আর এটার জন্য আপনাকে সর্বোচ্চ সময় ০১ থেকে ০২ মিনিটের ভিতরে শেষ করতে হবে।

(খ) অনুধাবনমূলক প্রশ্ন লেখার নিয়ম ঃ

অনুধাবন প্রশ্ন হচ্ছে সিজন ছেলের খ নাম্বার অংশ। আপনারা দেখে থাকবেন বা এ ধরনের প্রশ্নগুলোতে বেশিরভাগ সময়েই বর্ণনা কর বা বলতে তুমি কি বোঝো বা কি বোঝায় ব্যাখ্যা কর এরকম ভাবে প্রশ্ন করা থাকে। এগুলো প্রশ্ন সাধারণত বইয়ের গল্প বা কবিতা থেকে সরাসরি আসে তো আপনাকে অবশ্যই বইয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে উত্তর করতে হবে।

 এটির জন্য আপনার বরাদ্দ নাম্বার হচ্ছে দুই। এটি সাধারণত আপনাকে দুইটি প্যারাতে লেখা হয়। প্রথম প্যারাতে আপনার যে প্রশ্ন যে হয়েছে তার উত্তর দিবেন। দ্বিতীয় প্যারাতে ব্যাখ্যা বা বর্ণনা করবেন। আর অবশ্যই এই প্রশ্নের উত্তর সর্বোচ্চ ছয় লাইন এর উপরে যাবেন না পাঁচ লাইনের মধ্যে শেষ করার চেষ্টা করবেন। এর জন্য সময় বরাদ্দ সর্বোচ্চ ০৪ মিনিট ০৪ মিনিটের ভিতরে লেখা কমপ্লিট করলে আপনার জন্য ভালো।

(গ) প্রয়োগমূলক প্রশ্ন লেখার নিয়ম ঃ

প্রয়োগমূলক হচ্ছে সৃজনশীল প্রশ্নের গ নম্বর অংশ সাধারণত এটির জন্য বরাদ্দ নাম্বার হচ্ছে ৩ মার্ক। এ ধরনের প্রশ্নগুলোতে সাধারণত  এ ধরনের প্রশ্নগুলোতে আপনাকে বলে থাকে দেখবেন বর্ণনা করো ব্যাখ্যা করো মতামত দাও যুক্তি দাও সূত্র নিয়মতত্ত্ব নীতি পদ্ধতি ইত্যাদি প্রয়োগ করে কিছু নির্ণয় করতে বলে। এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে আপনাকে উদ্দীপকটি অবশ্যই ভালো করে পরিণত হবে এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আপনাকে তিনটি প্যারা করতে হবে।

তিনটি প্যারার প্রথম অংশ হচ্ছে জ্ঞান দ্বিতীয় অংশ হচ্ছে অনুধাবন তৃতীয় অংশ হচ্ছে প্রয়োগ। এখানে প্রথম অংশে যা চাওয়া হয়েছে প্রশ্ন তার উত্তর দিবেন দ্বিতীয় অংশ মূল বাক্যকে একটু ভালোভাবে উদ্দীপকে ও গল্পের আলোকে মোটামুটি ভালোভাবে ব্যাখ্যা করবেন।

 তিন নম্বর প্যারায় আপনাকে পুরোপুরি উদ্দীপক ও পাঠ্যসূচির সামঞ্জস্যের সাথে মিল রেখে বর্ণনা করতে হবে। আপনি যদি হুবহু উদ্দীপক তুলে দেন তাহলে মার্ক পাবেন না কারন এটি সৃজনশীল সৃজনশীল মানে আপনাকে নতুনভাবে চিন্তা করে তা উদ্ভাবন করতে হবে। এর জন্য আপনার সর্বোচ্চ সময় হচ্ছে ৭ মিনিটের মধ্যে আপনি কমপ্লিট করতে পারলে আপনার জন্য ভালো।

(ঘ) উচ্চতর দক্ষতা মূলক প্রশ্ন লেখার নিয়ম 

এটি হচ্ছে সৃজনশীল প্রশ্নের ঘ নম্বর অংশ বা শেষ অংশ। এটি একটি বড় করে লিখতে হবে। এর জন্য চার নম্বর বরাদ্দ থাকে। এখানে আপনাকে জ্ঞান থেকে শুরু করে অনুধাবন প্রয়োগ ও আপনার দক্ষতা কে কাজে লাগিয়ে উত্তর করতে হবে। বাংলা বা মানবিকের কোন সাবজেক্ট হলে আপনার বউ এর সাথে বিষয়ের মিল আছে কিনা তা যথার্থ বিশ্লেষণ মূল্যায়ন করতে হবে। 

এ প্রশ্নের সব সময় দেখা যায় বিশ্লেষণ করো মূল্যায়ন কর মতামত দাও তোমার পাঠ্য বইয়ের সাথে মিল আছে কিনা তোমার যুক্তি দাও এরকমভাবে এ প্রশ্ন দেওয়া থাকে। তো অবশ্যই আপনার বইয়ের পাঠ্যসূচী আর উদ্দীপক পরে আপনার নিজের দক্ষতাকে উচ্চ দক্ষতা করে আপনাকে এ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এ প্রশ্নটি চারটি প্যারাই লিখতে হবে। এ প্রশ্নটি লেখার জন্য আপনি ০৯ মিনিটের ভিতরে লিখতে বললে আপনার জন্য ভালো।

সিজনশীল প্রশ্ন লেখার সময় 

বিভিন্ন বোর্ড পরীক্ষায় বা স্কুল-কলেজের পরীক্ষায় দুই ঘণ্টা ৩০ মিনিটে সাতটি সিজনশীল লিখতে হয় । পরীক্ষা হয় তিন ঘন্টা সময় ব্যবধানে। এর মধ্যে ৩০ টি বহুনির্বাচনী এর জন্য ৩০ মিনিট সময়। আর বাকি ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট আপনার সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার জন্য।
 
এ সময়ের মধ্যে আপনাকে ০৭ সৃজনশীল কমপ্লিট লিখতে হবে। আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেন আমি প্রত্যেকটা প্রশ্ন লেখার নিয়ম বলার মধ্যে সময় উল্লেখ করেছিলাম যে তিন মিনিট 6 মিনিট 8 মিনিট কিন্তু কেন উল্লেখ করেছিলাম ?? আপনার দুই ঘণ্টা ৩০ মিনিটকে ০৭ দ্বারা ভাগ করেন তাহলে প্রায় ২২ এর কাছাকাছি আসছে। 

অর্থাৎ আপনাকে বাইশ মিনিটে একটি সৃজনশীল কমপ্লিট করতে হবে। তাহলে আপনি ০৭ সৃজনশীল লিখতে পারবেন । দেখুন ক এর জন্য ০২ মিনিট , খ এর জন্য ৪ মিনিট , গ এর জন্য ৭ মিনিট, 
ঘ এর জন্য ০৯ মিনিট টোটাল ২২ মিনিট হচ্ছে। তাহলে আপনি জানতে পারছেন যে সৃজনশীল প্রশ্নের কোন অংশের জন্য আপনি কত মিনিট পাচ্ছেন।

কিভাবে উত্তর লিখলে পূর্ণ নাম্বার পাওয়া যাবে 

সম্পূর্ণ নিয়ম মেনে প্রশ্ন বুঝে উদ্দীপক বুঝে পরিপূর্ণ উত্তর করলে আপনি পরিপূর্ণ নাম্বার পাবেন। এজন্য লেখার নিয়ম হচ্ছে আপনাকে খাতার প্রথম পেজে শুধুমাত্র (ক) (খ) প্রশ্ন লিখতে হবে । (গ) নম্বর প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে দেড় পৃষ্ঠা (ঘ) নম্বর প্রশ্নের উত্তর  দুই পৃষ্ঠা লিখতে হবে । লেখার মধ্যে কোন কাটাকুটি করা যাবে না । লিখতে লিখতে মনে করেন আপনার এক লাইন ভুল হয়েছে। তাহলে আপনি ওইটা এক টান দিয়ে কেটে দিবেন। প্রশ্ন বুঝে শুনে লিখবেন অযথা উদ্দীপক তুলবেন না। প্রশ্ন কি বলছে প্রশ্ন বুঝে উত্তর করবেন। প্রশ্নের উত্তর সব সময় প্যারা ভিত্তিক করবেন । প্রশ্ন আপনার কাছে যেভাবে উত্তর চাইবে সেভাবে উত্তর করবেন । এইভাবে যদি আপনি প্রশ্নের উত্তর করেন তাহলে আপনি পরিপূর্ণ উত্তর পাবেন।

শেষ কথা 

 আপনি যদি একজন শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজকে আমরা আর্টিকেলে আলোচনা করলাম সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার নিয়ম - সৃজনশীল প্রশ্ন কত পৃষ্ঠা লিখতে হবে সম্পর্কে। আপনি যদি এভাবে এপ্লাই করে প্রশ্ন লিখেন তাহলে ভুল নম্বর পাওয়া যাবে।

আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে কেমন লাগলো আপনার মূল্যবান মতামতটি জানিয়ে দিন আমাদের কমেন্ট বক্সে। আর সেই সাথে শেয়ার করে জানিয়ে দিন আপনার বন্ধুদেরকে সৃজনশীল লেখার নিয়ম সম্পর্কে।
আমাদের আজকের আর্টিকেলটি গুরুত্বপূর্ণ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ ।






এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

লার্নিং পয়েন্ট ২৪ নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url